কোলকাতার আশেপাশে ঘুরতে যাওয়ার জন্য নিরিবিলি স্থান খুজছেন,তবে আজকে তেমনি একটি অফবিট স্থান Mousuni Island (মৌসুনি দ্বীপ ) এর সাথে আপনাদের পরিচয় করাবো । কোলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিমি দুরে অবস্থিত একটি ছোটো দ্বীপ হল এই মৌসুনি দ্বীপ । সুমদ্রের ধারে অবস্থিত এই দ্বীপ টি শহরের কোলাহল থেকে মুক্ত এবং গ্রাম্য পরিবেশ নিয়ে গড়ে ওঠা ।

যারা সুমদ্র পছন্দ করেন তাদের এই স্থানটি অবশ্যই একটি আদর্শ স্থান হবে , কারন অন্যান্য সুমদ্র সৈকত গুলিতে পর্যটকদের যেমন ভিড় থাকে তেমন ভিড় এখানে পাবেন না । ফলত এখানে অনেকটাই শান্ত পরিবেশ পাবেন এবং মন ভরে সুমদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক শোভা ও তার সাথে অসাধারন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন । এছাড়াও রাতের বেলা চাদের আলোতে সুমদ্র , চিকেন বার্বিকু ও বনফায়ার , ক্যাম্প গুলির বিভিন্ন লাইটিং , মিউজিক , সব মিলিয়ে এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতার উপলব্ধি হবে এখানে ।
যারা সারাদিন অফিসের কাজ করে করে এক ঘেয়ে জীবন কাটাচ্ছেন বা সংসারের ঝুরঝামেলা থেকে একটু স্বস্তি পেতে ও ভারাক্রান্ত মনকে শান্ত করতে কোথাও দুদিন এর জন্য ঘুরতে যেতে চাইছেন তাদের তারা অবশ্যই এখানে আসতে পারেন ।
কোলকাতা থেকে খুব কাছে হওয়ায় weekend Destination হিসেবে দারুন একটি স্থান এই মৌসুনি দ্বীপ ।বন্ধুবান্ধব,পরিবার,এমনকি কাপেল রাও এখানে এসে দারুন একটা সময় কাটিয়ে যেতে পারেন ।
Mousuni Island Location | Where Is Mousuni Island Located
কোলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিমি দুরে অবস্থিত গঙ্গা দ্বারা অনেকগুলি ব-দ্বীপ গুলির মধ্যে একটি ছোটো দ্বীপ হল মৌসুনি । মৌসুনি দ্বীপ এর সব থেকে কাছের রেল স্টেশন হল নামখানা রেল স্টেশন । নামখান থেকে এই মৌসুনি দ্বিপের দূরত্ব প্রায় ২৩ কিমি ।
How to Reach Mousuni Island
কোলকাতা থেকে মৌসুনি দ্বীপ পৌঁছতে পারেন দুটি উপায়ে-
প্রথমত শিয়ালদহ থেকে লোকাল ট্রেন করে নামখান স্টেশন এ নেমে সেখান থেকে মাজিক গাড়ি বা বাস বা টোটো করে চলে আসুন বাগডাঙ্গা ফেরী ঘাট বা হুজুতের ফেরী ঘাট বা পাতিবুনিয়া ফেরী ঘাট । এরপর সেখান থেকে নৌকো করে চেনাই নদী পার হয়ে অপরদিকে চলে আসুন , সেখান থেকে আপনার বুক করা ক্যাম্প পর্যন্ত, অনেক টোটো পেয়ে যাবেন ফেরী ঘাট থেকেই ।
দ্বিতীয়ত ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ধরে চলে আসুন নামখান বা ১০ মাইল পর্যন্ত , এরপর সেখান ফেরী ঘাটে এসে একই উপায়ে চলে আসুন আপনাদের বুক করা ক্যাম্প এ ।
দেখুন ঊত্তরবঙ্গের কিছু অফবিট স্থান –
ফেরী ঘাট থেকে ক্যাম্প পর্যন্ত পৌঁছতে খরচ পরবে প্রায় ২৫ টাকা এবং নামখান থেকে ফেরী ঘাট ও নৌকা করে পার হতে সর্ব মোট খরচ পারে ৫০ টাকা ।
আপানারা যদি নিজদের গাড়ি নিয়ে আসতে চান তবে সেটিও করতে পারেন , চারচাকা নিয়ে এলে আপনারা ফেরী ঘাটে গাড়ীর স্ট্যান্ড এ গাড়ি রেখে দিতে পারেন এর জন্য আপনাদের প্রতিদিন এর কিছু চার্জ দিতে হবে । যদি বাইক নিয়ে আসেন তবে আপনারা বাইক নিয়ে নৌকো করে পার হতে পারেন অথবা ফেরী ঘাটে রেখে দিতে পারেন ।
Best Time to Visit Mousuni Island
বর্ষাকাল ছাড়া বছরের প্রায় সব দিন এখানে আশা যেতে পারে । বর্ষাকালের ঝরঝঞ্জা এড়িয়ে চলাই শ্রেয় ।
Where To Stay | Mousuni Island Camp/Tent/Reort | Mousuni Island Tent Price
মৌসুনি দ্বীপ এ থাকার জন্য এখানে সুমদ্রের ধারে অনেক ক্যাম্প পেয়ে যাবেন । এই সমস্ত ক্যাম্প গুলি সুমদ্রের একদম ধারে, হাত বাড়ালেই সুমদ্র ছুতে পারবেন । ক্যাম্প গুলিতে থাকার জন্য পেয়ে যাবেন টেণ্ট ও মাড হাউস ( মাটির বাড়ী) এই টেণ্ট গুলি বিভন্ন সাইজ এর হয় ফ্যামিলি নিয়ে থাকলে আলাদা ও সিঙ্গেল বা ডবল থাকলে আলদা । ক্যাম্পগুলিতে বাথরুম এর ভালো ব্যেবস্থা আছে । রাতে সুমদ্রের আওয়াজে শুনতে শুনতে এক অন্যরকম রাত কাটবে এখানে ।
এই ক্যাম্প গুলিতে ১ রাত ২ দিনের প্যাকেজ হিসেবে টেণ্ট ও মাড হাউস এর দাম হয় । টেণ্ট এর খরচ পরবে প্রায় ৮০০-১২০০ টাকা/প্রতিজন এবং মাড হাউস এর খরচ পরবে প্রায় ১৫০০ টাকা । সিজন অনুযায়ী দাম কম বেশি হতে পারে । এই খরচ এর মধ্যে তিন বেলা খাওয়া অন্তর্ভুক্ত । চিকেন বার্বিকু করতে গেলে এক্সট্রা ৩৫০-৪৫০ টাকা খরচ করতে হবে ।
Mousuni Island Outdoor Activity & Sightseeing
মৌসুনি দ্বীপ এ আপনারা যা যা করতে পারেন তা হল –
- সারাদিন রিলাক্স করে সুমদ্র দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিন ।
- সুমদ্রে স্নান করে নিতে পারেন ।
- নৌকো ভাড়া করে ঘুরে আসতে পারেন পাশে অবস্থিত জম্বু দ্বীপ ও আরও কিছু ছোটো ছোটো দ্বীপ ।
- পায়ে হেটে ঘুর আসেন সুমদ্রের ধারে ম্যানগ্রোভে জঙ্গলের মাঝে ।
- আশেপাশের গ্রাম্য পরিবেশ ও সেখান কার স্থানিয়দের কাজকর্ম ঘুরে দেখতে পারেন ।
- সুমদ্রের চড়ের পাশ দিয়ে ঘুরে আসুন ।
- রাতে বার্বিকু চিকেন বনফায়ার ও মিউজিক এর সাথে উপভোগ করুন ।
আশা করি আপনাদের মৌসুনি দ্বীপ সম্পর্কে এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকবে এবং আপনাদের ভ্রমনে সাহায্য করবে । আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই নিজেদের প্রিয়জনদের মাঝে শেয়ার করবেন ও কমেন্ট এ লিখে জানাবেন আর্টিকেলটি কেমন লাগলো ।